কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার করার কারণ

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার করার কারণ এই সমস্যার জন্য বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। অনেকে হোমিও চিকিৎসাও নিয়ে থাকেন। এত কিছুর পরও স্বাভাবিক হতে পারছেন না?? এটি খুব পরিচিত একটা স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ আমরা এই পোস্টে আলোচনা করব কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পড়ার কারণ সম্পর্কে।
কষা পায়খানা, পেট ঠিকমত পরিষ্কার হচ্ছে না, বাথরুমে অনেক সময় লাগছে এ সবকেই মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। এটাকে এক ধরনের রোগও বলা হয়। পায়খানা করতে গেলে অনেক প্রেসার দিতে হচ্ছে। আর এই প্রেশার দেওয়ার কারণে মলদ্বার দ্বারা রক্ত পড়তে পারে। ব্যথা অনুভূত হয়, আবার ঠিকমতো পায়খানা না হওয়ার কারণে পেটে ব্যথা করতে পারে।


অনেক সময় পেট শক্ত হয়ে যায়। কিছু কিছু লক্ষ্য আছে যে লক্ষণ গুলো যদি আপনার মাঝে প্রকাশ পায় তাহলে আপনিও কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানায় ভুগতে পারেন। চলুন তাহলে আজ জেনে নেই কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়??কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার করার কারণ সম্পর্কে।

যেসব খাবার খেলে কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হয়

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার কারণ এখন হয়তো আপনার মনে হতে পারে খাবারের সঙ্গে এই কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা সম্পর্ক কি? হ্যাঁ আপনি সঠিক বলেছেন!! সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ স্বাভাবিকভাবে খাবার প্রিয়। কেউ একটু কম খায় আবার কেউ একটু বেশি খায়।
কিন্তু যেসব খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা হয় সে খাবার গুলো ও আমরা খেয়ে থাকি। অবাক হলেও কথাগুলো সত্যি। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করলে,ঠিকঠাক মত না ঘুমালে, মানসিক চাপে থাকলে ইত্যাদি আরো নানান কারণে আমাদের শরীরে নানান সমস্যা সৃষ্টির করে।


এর মধ্যে কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য অন্যতম। শিশু, ৫০ বছরের বেশি, মধ্যে বয়সী মানুষ এবং গর্ভবতী মহিলারা কষা পায়খানা বা কষ্টকাঠিন্য রোগে ভুগতে পারেন। তাহলে চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক যেসব খাবার খেলে কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।

মলত্যাগের বেগ আসলে চেপে রাখাঃ কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার কারন আরো একটি অন্যতম কারণ হলো মলত্যাগের বেগ আসলে তার চেপে রাখ। স্বাভাবিকভাবে যখন মলত্যাগের ব্রেক আসবে তখন মলত্যাগ করা উচিত। আর যদি ঠিক সে সময় মলত্যাগ না করা হয় তাহলে সেটি আমাদের পেটের মধ্যে ধীরে ধীরে শক্ত হতে পারে এবং পরবর্তীতে সেটা কষ্ট কাঠিন্য বা কষা পায়খানা রূপ নেয়। সেজন্য সবার আগে আমাদেরকে মলত্যাগের বেগ আসলে মলত্যাগ করতে হবে।


ডায়েট কন্ট্রোলঃ আমরা অনেকেই আছি যারা প্রতিনিয়তন ডায়েট কন্ট্রোল করি। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার গ্রহণ না করার কারণে ঠিকমতো বাথরুম হয় না। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার কারণের মধ্যে ডায়েট কন্ট্রোল একটি অন্যতম কারণ। তাছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য বংশগতভাবে হয়। ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে পরবর্তীতে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

নিয়মিত চা খাওয়াঃ চা একটি জনপ্রিয় পানীয়। কিন্তু আমরা যখন প্রয়োজন চাইতে অতিরিক্ত বেশি করে খেয়ে ফেলি তখন আমাদের শরীরের জন্য সেটা ক্ষতি করে। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার আরো একটি অন্যতম কারণ এই চা। নিয়মিত চা পান করলে আমাদের শরীর অনেক শক্ত হয়ে যায় এবং সেইসাথে কষা পায়খানা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।


কাঁচা কলা খাওয়াঃ এই কাঁচা কলা খাওয়ার কথা শুনে অনেকে হয়তো হাসছেন। অনেকে মনে করতে পারেন পাকা কলা খাওয়া যায় কিন্তু কাঁচা কলা ও খাওয়া যায়। অনেকে আছেন যারা বিভিন্ন কারণে এই কাঁচা কলা খেয়ে থাকেন। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়??কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার করার কারণ কাঁচা কলা খাওয়ার কারণ ও হতে পারে। তাছাড়া পাকা কলার মধ্যে বিচি কলা খেলে কষা পায়খানা হয়।

মাংস খাওয়াঃ মাংস কে না খেতে ভাল বাসেন। কিন্তু যেসব মাংসের চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে যেমন খাসি ও গরুর মাংস। পাকস্থলি এ সকল খাবার সহজে হজম করতে পারে না। এ জাতীয় খাবার বা মাংস আমাদের অনেক বাড়িয়ে দেয়। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার আরো একটি কারন।  

দুধঃ দুধ ও দুধের তৈরি খাবার যেমন আইসক্রিম পনির ইত্যাদি খেলে অনেকের কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার একটি অন্যতম কারণ খাবারের ফাইবার বা আঁশ কম থাকা। এ ধরনের খাবারের ফাইবার বা আঁশ কম থেকে।

খাবারে যদি ফাইবার বা আঁশ কম থাকে তাহলে পাকস্থলী সেটা সহজে হজম করতে পারে না। দুধ পান করা আমাদের শরীরের জন্য ভালো এবং দই ,টক দই আমাদের হজমের জন্য খুব দ্রুত সাহায্য করে।

ভাজাপোড়া খাবারঃ অনেকেরই ভাজাপোড়া খাবার খেলে পায়খানা কষা হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার কারণ আরও একটি কারণ হলো ভাজাপোড়া খাবার। ভাজাপোড়া খাবারের মধ্যে যেমন সিঙ্গারা, পুরি, আলু ভাজা ইত্যাদি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

ঠান্ডা খাবারঃ ঠান্ডা বা ফ্রিজে রাখা খাবারের পানি শুকিয়ে যায়। আর এগুলো খাবারের লবণ অনেক বেশি থাকে। এইসব খাবার খেলে কষা পায়খানা হয়।

গুটেনঃ এক ধরনের জটিল প্রোটিনের নাম হচ্ছে গুটেন। বার্লি, গম, ভুট্টা এসবে থাকে। এটি হলো এক ধরনের আঠালো যা খাবারকে ফুলিয়ে তুলে। রুটি, পাউরুটি, কেক, পাস্তা, চিপস এই জাতীয় খাবারে গুটেন থাকে। যা আমাদের কষা পায়খানা কারো দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলে। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার একটি অন্যতম কারণ এই গুটেন জাতীয় খাবার। 

আঁশ জাতীয় খাবার কম খাওয়াঃ আঁশ জাতীয় খাবার আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানাকে নরম করে। সেজন্য বেশি বেশি আঁশ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।

কোন খাবার খেলে কষা পায়খানা দূর হয়

প্রতিদিন আমাদের খাদ্য তালিকায় এমন খাবার রাখা উচিত যে খাবার গুলো খেলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা দূর হতে পারে। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম খাবার খেয়ে থাকি। কখনো সেগুলো আমরা মুখরোচকের জন্য খায়। আবার কখনো সেটি আমাদের শরীরের উপকারের জন্য খায়।
আমরা যখন কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে শরণাপন্ন হই তখন তারা আমাদেরকে বরাবরই একটা সাজেশন দিয়ে থাকেন তা হল খাবার তালিকায় খাবারের মান উন্নয়ন এবং তরল কিছু খাবার রাখা যে খাবার গুলো খেলে আমাদের শরীর নরম থাকে এবং তথা পায়খানা দূর হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়??কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পড়ার কারন আমাদের খাদ্য তালিকায় নরম জাতীয় খাবার না রাখা। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন খাবার খেলে কষা পায়খানা দূর হয়।

শাক খাওয়াঃ আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কিছু না কিছু শাক রাখতে হবে। শাক আমাদের হজমে দ্রুত সাহায্য করে। আঁশ জাতীয় খাবারের মধ্যে শাক একটি অন্যতম খাবার। লাল শাক, সবুজ শাক, কলমি শাক, পুঁইশাক, পালং শাক, লাউ,পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, সিম, চাল কুমড়া, শসা ইত্যাদি ছাড়াও আরো অনেক রকম শাক আছে যেগুলো শাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কাজেই আমাদের খাবার তালিকা শাকের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

কলা খাওয়াঃ পাকা কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য তথা কষা পায়খানা দূর হয়। সকালে এবং রাতে সময় করে কলা খেতে হবে। কলায় প্রচুর আঁশ রয়েছে।

গাজরঃ গাজর আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। গাজর একদিকে সবজি এবং কাঁচা ফল হিসেবে খাওয়া যায়। গাজর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য তথা কষা পায়খানা দূর হয়।

আমঃ কাঁচা এবং পাকা যে আমই খান পায়খানা ক্লিয়ার হয়ে যায়। পায়খানা দ্রুত হওয়াতে আম অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আম সবচাইতে কার্যকারী উপাদান। যাদের কষা পায়খানা হয় তারা আম খেলে অনেক উপকার পাবেন।

শসাঃ শসা সালাদ হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। শসা টমেটো গাজর ইত্যাদি একসঙ্গে মিশ্রিত করে একটি সুন্দর শালা তৈরি করা যায়। শসায় ৯৪ শতাংশ পানি থেকে। যা আমাদের কষা পায়খানা কে নরম করতে সাহায্য করে।

নাশপাতিঃ নাশপাতি হলো এমন একটি ফল যা আমাদের দৈনন্দিন আঁশের চাহিদার ২২ শতাংশ পূরণ করে থাকে। এই নাশপাতি খেলো কোষ্ঠকাঠিন্য তথা কষা পায়খানা দূর হয়। লাউ, পেঁপে, এবং নরম জাতীয় সবজি। লাউ, পেঁপে এবং নরম জাতীয় সবজি হলো এমন এক ধরনের সবজি যা আমাদের শরীরকে নরম রাখার পাশাপাশি আমাদের মলকে ও নরম করে এবং কষা পায়খানা দূর করে।

শিশুদের কষা পায়খানা হলে করনীয় এবং দূর করার উপায়

সব মায়েদের একটা কমন অভিযোগ থাকে যে শিশুরা খেতে চায় না। আসলে কেন খেতে চায় না এই বিষয়টি তারা বুঝতে চায় না বা বুঝতে পারে না। ক্ষুধা না লাগলে তো সে কখনো খেতে চাইবে না। আর ক্ষুধা লাগার একটি বড় কারণ হলো ঠিকমতো পায়খানা হওয়া।
যখন সঠিক সময় ঠিকমতো পায়খানা হবে তখন ক্ষুধা ও লাগবে এবং শিশু আপনা আপনি নিজ থেকে খেতে চাইবে। সাধারণত শিশু যদি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন পায়খানা না করে তাহলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় দেখা যায় যে ৩-৫দিন চলে গেলেও শিশুর পায়খানা ঠিক মত হচ্ছে না।


এমন তো অবস্থায় কিছু ঘরোয়া টিপস মেনে চললে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা দূর হয়। এতে করে  কোন ওষুধের প্রয়োজন হয় না। চলুন তাহলে আজ জেনে নেওয়া যাক।

সুষম খাদ্য সরবরাহঃ শিশুকে নিয়মিত সুষম খাদ্য খাওয়াতে হবে। সুষম খাদ্যে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আর এসব উপাদান আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজে লাগে। সুষম খাদ্য যখন সরবরাহ করা হবে তখন শরীরের মধ্যে সব ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেলের এর অভাব পূরণ হবে।

শরীর নরম হবে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা থাকলে সেটা দূর হয়ে যাবে। কাজেই যেসব শিশুদের পায়খানা ঠিকমতো হয় না তাদেরকে সুষম খাদ্য পরিমিত খাওয়াতে হবে।

টয়লেটের রুটিন করে দেওয়াঃ সকালে এবং বিকেলে প্রত্যেকটি মানুষের টয়লেটে যাওয়া উচিত। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং বিকেলে টয়লেট করলে পেট পরিষ্কার হয়ে যায়। শিশুদেরকে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর টয়লেট করার অভ্যাস করতে হবে।

এতে করে একটা নির্দিষ্ট সময় দেখা যাবে শিশুরা সকালবেলা আপনা আপনি নিজ থেকে টয়লেটে চলে যাবে। প্রয়োজন হলে শিশুর সুবিধার কথা চিন্তা করে তাদেরকে একা একা টয়লেট করতে দিন। অনেক শিশু আছে যারা একা একা টয়লেট করতে পছন্দ করে ।

সকালে ও রাতে পুষ্টিকর খাবারঃ শিশুর জন্য সকালে এবং রাতে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে ডিম দুধ কলা সবজি এবং আরো কিছু ফলমূল রাখতে হবে। ডিম দুধ কলা সবজি এগুলো খেলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা দূর হয়ে যাবে।

ফলমূল এবং সবজিঃ ফলমূল এবং সবজিতে প্রচুর পরিমাণ আঁশ রয়েছে। আর এসব আঁশ জাতীয় খাদ্য আমাদের কষা পায়খানা দূর করতে ভূমিকা রাখে।

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ানোঃ শিশুদের খাদ্য তালিকায় আঁশ জাতীয় খাবার রাখতে হবে। আঁশ জাতীয় খাবার হল এমন এক ধরনের খাবার যা আমাদের অন্যান্য খাবার কে হজম করার পর সেটি মল হিসেবে পরিণত করতে ভূমিকা রাখে। কচু শাক, লাল শাক, পুঁইশাক, পালং শাক, ডাটা শাক, কলমি শাক, সবুজ শাক, লাউের ডগা এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে।

পরিমিত পানি পান করানোঃ পানি হজমে দ্রুত সাহায্য করে। বেশি বেশি করে পানি পান করলে আমাদের পাকস্থলী খুব দ্রুত পরিষ্কার হয়। পানি যখনই কম পান করা হবে তখন সেটি আমাদের পাকস্থলীতে সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে বাধাগ্রস্ত করে। সেজন্য শিশুদেরকে দৈনিক বেশি বেশি পানি পান করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য পানি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করানোঃ শিশুরা যখন বসে থাকবে বা বাসায় থাকবে তখন তাদের পায়খানা কম হতে পারে। এই কম হওয়ার কারণ হলো নিয়মিত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম না করানো। শিশু যখন নিয়মিত শরীর চর্চা করবে তখন তার পাকস্থলী বা পরিপাকতন্ত্রে হজম দ্রুত হবে। আর হজম দ্রুত হলে পায়খানাও তাড়াতাড়ি হবে। সেজন্য শিশুকে ব্যায়াম করার জন্য উৎসাহ  দিতে হবে।

মাংস জাতীয় খাবার কম খাওয়ানোঃ মাংস জাতীয় খাবারের প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। আর এসব ফ্যাট থাকায় আমাদের হজম ঠিকমতো করতে পারেনা। সেজন্য শিশুকে মাংস জাতীয় খাবার কম খাওয়াতে হবে। যাতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানার সমস্যা না হয়।

ডাক্তার দেখানোঃ এসব ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার পরেও যদি শিশুর কষা পায়খানার দূর না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

বয়স্কদের কষা পায়খানা দূর করার উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার করার জন্য বয়সের কারন ও থাকে। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর প্রত্যেকটা মানুষেরই কষা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ৫০ বছরের বেশি হলে কষা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মানুষের শরীর যখন দিন দিন শুকিয়ে যায়, শরীরে পানি ঘাটতি সহ বিভিন্ন ভিটামিন এবং প্রোটিনের ঘাটতি থাকে তখন এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

তাছাড়া কিছু কিছু খাদ্যাভাসের কারণে মানুষের এই কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা হয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কষা পায়খানা হলে কি করলে এ থেকে মুক্তি পাবেন।

চা, কফি, সিগারেট না হওয়াঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা চা, কফি, সিগারেট ইত্যাদির ওপর আসক্ত হয়ে পড়ি। এগুলো আমাদের শরীরকে অনেক কঠিন করে ফেলে। এগুলো খেলে আমাদের শরীর দুর্বল, রোগাক্রান্ত এবং শক্ত হয়ে যায়। ঠিকমতো ঘুম হয় না ক্ষুধা মন্দা এবং কষা পায়খানায় এর মধ্যে অন্যতম। কাজেই গুলো পরিহার করতে হবে।


সঠিক সময়ে পরিমিত খাদ্য গ্রহণঃ  কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার  আর ও একটি কারণ সঠিক সময়ে পরিমিত খাদ্য গ্রহণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ এমনিতেই কমে যায়। আর খাদ্য গ্রহণ কমে গেলে এমনিতে পায়খানার চাপ কমে যায়।

সেজন্য সঠিক সময়ে পরিমিত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাসটাকে বজায় রাখতে হবে। ক্ষুধা পেটে থাকলে অনেক সময় খাবারের প্রতি অনীহা বাড়তে থাকে। খাবারের চাপ না থাকলে পায়খানার চাপ থাকে না। তখন কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা শুরু হয়।

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়াঃ ঘুমের প্রভাবে শরীরে অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে কষা পায়খানা একটি অন্যতম। সেজন্য আমাদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভ্যাস করতে হবে। সঠিক সময় পরিণত খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমেরও কোন বিকল্প নেই।

দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকাঃ অনেক সময় টেনশান এবং দুশ্চিন্তার কারণে আমাদের খাবারের উপর অরুচি, খাবারের অনীহা, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং কষা পায়খানার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। সেজন্য আমাদের অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা টেনশন করা যাবে না। সবসময় দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।

কষা পায়খানা দূর করার উপায়

প্রচুর শাক সবজি খাওয়াঃ আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কিছু না কিছু শাক সবজি রাখতে হবে। শাক সবজি আমাদের হজমের দ্রুত সাহায্য করে। আঁশ জাতীয় খাবারের মধ্যে শাক সবজি একটি অন্যতম খাবার।


লাল শাক, সবুজ শাক, কলমি শাক, পুঁইশাক, পালং শাক, লাউ,পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, সিম, চাল কুমড়া, শসা ইত্যাদি ছাড়াও আরো অনেক রকম শাক আছে যেগুলো শাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কাজেই আমাদের খাবার তালিকা শাকের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

কলা খাওয়াঃ পাকা কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য তথা কষা পায়খানা দূর হয়। সকালে এবং রাতে সময় করে কলা খেতে হবে। কলায় প্রচুর আঁশ রয়েছে।

গাজরঃ গাজর আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। গাজর একদিকে সবজি এবং কাঁচা ফল হিসেবে খাওয়া যায় । গাজর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য তথা কষা পায়খানা দূর হয়।

আমঃ কাঁচা এবং পাকা যে আমই খান পায়খানা ক্লিয়ার হয়ে যায়। পায়খানা দ্রুত হওয়াতে আম অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আম সবচাইতে কার্যকারী উপাদান। যাদের কষা পায়খানা হয় তারা আম খেলে অনেক উপকার পাবেন।

সিজিনাল ফলমূল খাওয়াঃ সিজনাল ফল মূলে যেমন ব্যাপক পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন পাওয়া যায়। তেমনি এসব ভিটামিন গুলো আমাদের শরীরের জন্য ব্যাপক উপকার করে। ফলমূল যেহেতু আঁশ জাতীয় খাবারের মধ্যে একটি। ফলমূল খাওয়ার ফলে আমাদের মল অনেক নরম হয়। আর মল নরম হওয়ায় সেটি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায়। আর সেজন্য  ফলমূল খাওয়ার প্রতি অভ্যাস বাড়াতে হবে।

শসাঃ শসা সালাদ হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। শসা, টমেটো, গাজর ইত্যাদি একসঙ্গে মিশ্রিত করে একটি সুন্দর শালা তৈরি করা যায়। শসায় ৯৪ শতাংশ পানি থাকে। যা আমাদের কষা পায়খানা কে নরম করতে সাহায্য করে

নাশপাতিঃ নাশপাতি হলো এমন একটি ফল যা আমাদের দৈনন্দিন চাহিদার ২২ শতাংশ পূরণ করে থাকে। এই নাশপাতি খেলো কোষ্ঠকাঠিন্য তথা কষা পায়খানা দূর হয়।

লাউ পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, এবং নরম জাতীয় সবজি খাওয়াঃ লাউ পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, এবং নরম জাতীয় সবজি হলো এমন এক ধরনের সবজি যা আমাদের শরীরকে নরম রাখার পাশাপাশি আমাদের মলকে ও নরম করে এবং কষা পায়খানা দূর করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরার করার কারণ 

কোন কিছু খেতে কার না ভালো লাগে। খাওয়ার সময় যেমন আমার মজা করে খাই ঠিক তেমনি মলত্যাগের সময় যদি কষ্ট হয় তাহলে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের দেশের প্রায় সিংহভাগ মানুষই এই কষা পায়খানা ও  অনবরত রক্ত পড়া রোগে ভুগে থাকেন। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?? কষা পায়খানা ও অনবরত রক্ত পরা যে কোন বয়সে হতে পারে। সাধারন ভাবে যখন মল শক্ত হয়ে যায়, স্বাভাবিক ভাবে মল বের হতে পারে না সেই অবস্থায় মলের সাথে রক্ত বের হয়। মলদ্বারের পেশি যখন ছিঁড়ে যায় তখন রক্ত পড়ে। অনেক সময় পাইলেস সমস্যা থাকলে রক্ত পড়ে। আবার পাকস্থলি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়ে। এতে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। যদি তাহলে দেরি না করে অতি তারাতারি  ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ।

লেখকের মন্তব্য

আমাদের এই পোস্টটি পরে যদি আপনার কাছে ভাল লাগে বা একটু হলেও আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে বেশি বেশি শেয়ার করবেন। আপনার শেয়ার করা এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে এবং উপকৃত হবে। তাই আর দেরি না করে সবার সাথে পোস্টটি শেয়ার করুন।

পোস্টটি পরে আপনাদের যদি কোন মতামত থাকে বা কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url