দেশীয় ফলের পুষ্টি সমাহার সম্পর্কে জানুন

আপনারা অনেকেই জানেন না দেশীও ফল বলতে আসলে কি বুঝায়, দেশীও ফল গুলো কি কি, কোথায় পাওয়া যায় এবং এর দামই বা কত। আপনারা যারা দেশী ফল সম্পর্কে জানতে জান এই পোস্টটি আজ তাদের জন্য। আজ আমরা এই পোস্ট এর মাধ্যমে দেশীও ফল এবং এর পুষ্টিগুন সম্পর্কে আলোচনা করবো।



দেশীয় ফল কি কি

সারা বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০ টির মতো দেশিয় ফল রয়েছে। এসব ফলের এক এক রকম নাম এবং এক এক রকম পুষ্টিগুণে ভরপুর। যেমন সুস্বাদু তেমনি মানে সেরা। এসব ফলের সাথে আমরা অনেকে পরিচিত আবার অনেকেই হয়তো পরিচিত না। বাংলাদেশের এখনো বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে প্রায় অনেক রকম সুস্বাদু এবং হরেক রকম পাওয়া যায়।

 একেক ফলের নাম জায়গায় ভেদে একেক রকম হয়ে থাকে। দেশীয় ফল এর মধ্যে যেগুলো ফল আমার সচরাচর চিনে থাকি বা চিনি সেগুলোর হলো আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, পেঁপ, তেঁতুল,তরমুজ, তাল, বেল, জলপাই, আমড়া, চালতা, ডালি, বেদনা, নাশপাতি, সফেদা আমলকি, কাগজি লেবু, বাতাবি লেবু, কলা, নারিকেল, আনারস, বাঙ্গি,আতা, কামারাঙ্গা, ডুমুর, খেজুর, সহ আরো অনেক রকম ফল। এসব ফলগুলো প্রায় সব জায়গায় পাওয়া যায় সেজন্য এসব ফলের দাম কম।
 

বারোমাসি ফলগুলো কি কি

কলা, পেয়ারা, পেঁপে, ডাব, নারকেল, শসা, আনারস, তরমুজ, এগুলো ফল সারা বছর পাওয়া যায়। এগুলো ফল পাকার জন্য বিশেষ কোনো সময়ের বা তাপমাত্রার প্রয়োজন হয় না। ফলগুলো পুষ্ট হলেই পেকে যায়। এসব ফল খেতেও মজা এবং সুস্বাদু লাগে।

গ্রীষ্মকালীন ফলগুলো কি কি 

গ্রীষ্মকালীন সময়ে সব রকম ফল পাকে। এজন্য গ্রীষ্মকালকে মধু মাস বলা হয়। গ্রীষ্মকাল যখন আসে তখন বাজারে নতুন ফলের হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। যেন মনে হয় গ্রীষ্ম তার ফলের ঝুড়ি নিয়ে আমাদের দরজায় জানান দিচ্ছে। এই বৈশাখ মাসেই জামাই আদরের ধুম পড়ে। দিকে দিকে সাড়া পড়ে যায়। যা এখন ও প্রচলিত আছে। 

গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে,আম,জাম,কাঠাল, লিচু,কলা,পেঁপে,পেয়ারা,আনারস, ডালিম,মালটা, বাঙ্গি,বেল পাওয়া যায়। ফলের গন্ধে চারদিকে যেন মৌ মৌ বাতাস বিরাজ করে। এছাড়াও সবরকম ফল গ্রীষ্মকালে পাওয়া যায়। নানান রকম স্বাদ গন্ধে যেন পেটুক বাঙ্গালীকে নতুনভাবে জানান দেয় নতুন এক আগমনী বার্তা।

দেশী ফলের পুষ্টি গুনাগুন 

বেশিরভাগ ফল গ্রীষ্মকালে পাকে। বৈশাখ এবং জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মকালে ধীরে ধীরে সব রকমের ফল বাজারে উঠতে শুরু করে। সারা বছর কম বেশি ফল পাওয়া গেল এই সময়টাতে একটু বেশি ফল পাওয়া যায়। ফল পাকলে সেগুলো হলুদ রং ধারণ করে। পাকা ফলে বিভিন্ন রকম ভিটামিন পাওয়া যায় তা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। 

হলুদ রঙ ধারণকারী ফল গুলোর মধ্যে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। কাঁচা ফলগুলোতে ভিটামিন সি ডি সহ আরো অনেক দরকারি ভিটামিন থাকে। ফল পাকলে রসের টাইটুম্বুর হয়ে যায় এবং সেগুলো খেতেও খুব ভালো লাগে খুব মজা লাগে। ফল পাকলে সেগুলো নরম হয়। কিছু কিছু ফল আছে যেগুলো পাকলে ও উপরের খোলসটা অনেক শক্ত থাকে এবং ভিতরে পাকা নরম ফল টুকু থাকে, যেগুলো খাওয়া হয় যেমন বেল। 

অনেক ফল আছে যেগুলো পাকলেও টক লাগে যেমন তেতুল, আমড়া,জলপাই, কামরাঙ্গা,আমলকি, লটকন ইত্যাদি। দেশিও ফল উৎপাদনে কোন প্রয়োগ করতে হয় না। এগুলো ফলকে বনে জঙ্গলের ঝুলতে দেখা যায়। আবার অনেক রকম ফল আছে যেগুলো উৎপাদনের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করে।যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। 

বর্তমানে আম, কলা, লিচু, পেয়ারা, আনারসহ আরও বেশ কিছু ফল রয়েছে যেগুলোতে ফরমালিন ব্যবহার করে। ফরমালিনযুক্ত ফল সবসময় জন্য পরিহার করা উচিত। ফরমালিনমুক্ত ফল খেলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। দেহে ভিটামিনের অভাব গুলো পূরণ হয়। এবং সঠিকভাবে শরীর এবং ব্রেইন বিকাশিত হতে সাহায্য করে হতে সাহায্য করে।

দেশীয় ফলের উপকারিতা

ফলের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ শর্করা রক্তে মিশে যাওয়ার পরে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গের কম শক্তি বাড়িয়ে তোলে এবং সেই সঙ্গে মস্তিষ্ককে সজাগ রাখে ফলে সার্বিকভাবে শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পায়। বেশিরভাগ ফলের মধ্যে ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান থাকে।

প্রতিটি মানুষের প্রতিদিনই খাদ্য তালিকায় যেকোনো ধরনের ফল থাকা উচিত এতে শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিয়মিত ফল খেলে কি ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় ঃ-
প্রতিদিন পরিমাণ মতো সময় ফল খেতে হবে।

ফল আপনার স্বাস্থ্য কে অনেক উজ্জল এবং সুন্দর করে তোলে।ফলের ভিতরে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের ভিতরে ব্যাকটেরিয়া গুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে কাজ করে।আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।আঁশ জাতীয় খাদ্য আমাদের শরীরে মেদ জমতে। ফলে প্রচুর পরিমাণ আঁশ রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো আপনি যতই ফল খান না কেন খুব সহজে মোটা হবেন না।

ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতেও ফল খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।ব্রেইনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে।ফল হজমশক্তি বাড়াতে একটু সাহায্য করে।

দেশীয় ফলের অপকারিতা

 মাত্রাতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। ফলের ক্ষেত্রেও কথাটা ঠিক একই রকম। ফলকে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে ধরা হয়। মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পুষ্টি উপাদান ফলের মধ্যে থাকে।প্রত্যেকটি ফল কম বেশি মিষ্টি হয়। আর মিষ্টি মানে প্রাকৃতিক চিনির উৎস।

তাই প্রয়োজনের চাইতে বেশি খেলে এই ফল স্বাস্থ্যের উপর বাজে প্রভাব ফেলতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদেরকে অন্তত ফল খাওয়ার বিষয়ে সাবধান হওয়া জরুরী।কিছু কিছু ফল আছে যেগুলো বেশি খেয়ে ফেললে ফুট পয়জনিং সমস্যা হয়।গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়, বুকে জ্বালাপোড়া ভাব হতে পারে, এমনকি বেশি মাত্রায় খাওয়ার কারণে হওয়ার কারণে বমিও হতে পারে।

 কিছু কিছু ফল আছে যেগুলোতে এসিড থাকে সেগুলো খাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত প্রয়োজন বুঝে তারপর খেতে হবে। না হলে হজম শক্তি এবং লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

এই পোস্টটি যদি ভাল লাগে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করুন 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url