হাঁস পালনের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
হাঁস গৃহপালিত প্রাণী, অনেকে আবার গৃহপালিত পাখি ও বলে থাকেন। গ্রাম অঞ্চলে হাঁস পালনে বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে, আমাদের দেশে হাঁস পালনের জন্য দিন দিন বেশি জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। অনেকেই হয়ত জানেন না হাঁস কিভাবে পালন করতে হয়, হাঁস বছরে কতটি ডিম দেয়, হাঁস পালন করতে হলে কত টাকা খরচ করতে হয় এবং এই হাঁস পালন থেকে মাসে বা বছরে কত টাকা আয় করা সম্ভব!!!!! আজ আমরা আপনাদের সামনে হাঁস পালনের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরব। হাঁস পালন সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে এই পোস্টটি পড়তে হবে।
হাঁস পালনের মাধ্যমে ডিম এবং মাংসের চাহিদা পূরণ হয়। হাঁসের ডিম এবং মাংসে প্রচুর পুষ্টি রয়েছে। বিশেষ করে হাঁসের মাংস অন্যান্য সব মাংসের চাইতে অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুনে ভরপুর। বাংলাদেশরে আবহাওয়া হাঁস পালনের জন্য উপযোগী। সব দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে দাঁড়াবে।
বর্তমান অনেকেই এখন বেকারত্ব থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হাঁস পালন শুরু করেছে। এবং পেশা হিসেবে হাঁস পালনকে গ্রহণ করেছে। হাঁস পালনে খরচ কম হয়। আবার অনেকেই আছেন যারা সংসার থেকে বাড়তি কিছু টাকা আয় করতে চান, সেক্ষেত্রে হাঁস পালন করেও বাড়তি কিছু টাকা আয় করতে পারবেন, এবং সেই সাথে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা ও পূরণ করতে পারবেন।
হাঁস পালনের পরিকল্পনা
আদিকাল থেকেই মানুষ হাঁসের সাথে পরিচিত। বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে মানুষ হাঁস পালন করে। কেউ হয়তোবা ৫টি, ৭টি, ১০টি ১৫ টি, আবার ২০টির মত হাঁস পালন করে থাকে। অনেকেই জানেন না হাঁস পালন করে প্রচুর টাকা আয় করা যায়। সঠিক পরিকল্পনা, হাঁসের জাত, জায়গা ইত্যাদি সঠিকভাবে জানতে না পারায় বেশির ভাগ মানুষ হাঁস চাষে সফলতা অর্জন করতে পারে না।
এর আগে আমরা ইতো পূর্ব জেনে ফেলেছি হাঁসের ডিম এবং মাংসে অনেক পুষ্টি রয়েছে। আমরা যারা স্বল্প সময়ে অধিক আয় করতে চায় তারা এই হাঁস পালন পদ্ধতিকে বেছে নিতে পারি। হাঁস পালন পদ্ধতিতে খুব অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ আয় করতে পারবেন। বিভিন্ন বেসরকারি হাঁসের খামার থেকে বাচ্চা সংগ্রহ করতে পারবেন।
আর পালন করার জন্য জলাবদ্ধ জায়গা, পুকুর, নদী নালা, খাল বিল, বেছে নিতে পারেন। এসব জায়গায় বেশির ভাগ সময় পানি থাকে। হাঁস পালনের জন্য খাঁচা পদ্ধতি, আবদ্ধ পদ্ধতি এবং অর্ধ আবদ্ধ পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন। হাঁসের সংখ্যা যদি কম হয় তাহলে পুকুরেও হাঁস চাষ করা যায়।
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
হাঁসের ডিমে মুরগির ডিমের চাইতে অনেক বেশি পুষ্টি রয়েছে। হাঁসের ডিমে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,আয়রন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১২, থায়ামিন থাকে যা মুরগির ডিমের চাইতে ১০০ গ্রাম বেশি থাকে। ২০১৪ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, হাঁসের ডিমের সাদা অংশে বিভিন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগ এবং নিউরোডিজেনারেটিভ সহ বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম।
এছাড়াও হাঁসের ডিমে থাকা ভিটামিন বি ১২ ক্যান্সার, হৃদরোগের, ঝুঁকি কমায়। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকার কারণে দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং রক্ত ও ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। সেলেনিয়াম এর কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রিবোফ্লাভিন নামে একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই হাঁসের ডিমের মধ্যে পাওয়া যায়।
মুরগির ডিমের চাইতে হাঁসের ডিম আকারে বড় এবং এর কুসুম ও বড় হয়। এর খোসা মুরগির ডিমের চাইতে কিছুটা শক্ত। বড় কুসুমের কারণে হাঁসের ডিমের চর্বি এবং কোলেস্টেরল উভয় মুরগির ডিমের চাইতে তুলনামূলক একটু বেশি থাকে।
হাঁসের খাদ্য তালিকা
হাঁস একটা জলচর প্রাণী। হাঁসের খাবার মূলত সহজলভ্য। বাংলাদেশে বিভিন্ন হাওর অঞ্চল যেমন, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নেত্রকোনা, নরসিংদী, হবিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাইবান্ধা সহ যেসব জায়গায় বছরের বেশিরভাগ সময় পানি থাকে সেইগুলোতে হাঁস চাষ করা লাভজনক। এ সকল জায়গায় হাঁস পালনের ক্ষেত্রে হাঁসকে বাহির থেকে কোন খাদ্য দিতে হয় না।
বিলে প্রচুর পরিমাণ ছোট মাছ, পোকামাকড়, শামুক, কেঁচো, কাঁকড়া, ক্ষুদি পানা, শাপলা, বিভিন্ন ধরনের জঙ্গল, নরম ঘাস থাকে যা হাঁস খেয়ে থাকে। আর এইগুলো খাওয়ার ফলে হাঁসের শারীরিক বৃদ্ধি খুব দ্রুত ঘটে, এবং ডিম গুলো অনেক বড় বড় হয়। হাঁসের ডিমের চাহিদা এমনিতেও অনেক রয়েছে তার মধ্যে যদি ডিম বড় হয় তাহলে তো কথাই নেই।
সেই সাথে সাথে এসব হাঁসগুলো খুব সুস্বাদু হয় যার কারণে এসব হাঁসে মাংসের জন্য ও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। হাঁস পালনের জন্য আলাদা কোন সুষম খাবারের প্রয়োজন পড়ে না। মুরগিকে খাওয়ানোর জন্য সুষম খাদ্যগুলো হাঁসকে খাওয়ানো যেতে পারে। হাঁস দিনের বেশির ভাগ সময় পানিতে থাকে, এবং সে ঘুরে ঘুরে তার খাবার সংগ্রহ করে।
অধিক পরিমাণে ডিম উৎপাদনের জন্য সকাল এবং বিকেলে পরিমাণ মতো দানাদার খাবার দিতে হবে। আর খাবার দেয়ার সময় অবশ্যই সাথে পানি দিতে হবে। পানি না থাকলে শুকনো খাবার খাওয়ার সময় গলায় আটকে যেতে পারে।
এছাড়া সুষম খাদ্যের জন্য ধান, চালের গুরা, পোলট্রির খাদ্য এবং বাজারে পাওয়া খাদ্য খাওয়াতে হবে।
পুকুরে যদি হাঁস চাষ করা হয় তাহলে হাঁসের উচ্ছিষ্ট জৈব মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এতে করে মাছ চাষেও সফলতা আসে। আর একটি হাঁস বছরে প্রায় গড়ে 300 টির মত ডিম দিয়ে থাকে।
হাঁসের রোগ এবং প্রতিকার
সাধারণত হাঁসের রোগ বালাই কম হয়। হাঁস পালনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু রোগ দেখা যায়। বাংলাদেশে যতগুলো হাঁস পালন করা হয় সেগুলো অধিকাংশ পরিণত বয়সে যাওয়ার আগে মারা যায়। বিভিন্ন রোগের কারণে এসব হাঁসের মৃত্যু হয়ে থাকে। ডাকভাইরাল হেপাটাইটিস, ডাকপ্লেগ, ডাক কলেরা, মাইকোটক্সিকোসিস ও বটুলিজম, আমাশয় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য রোগ। দুটি মারাত্মক রোগ হল ডাকপ্লেগ ও ডাক কলেরা। এ দুটি রোগে যদি কোন হাঁস আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে অন্যান্য সুস্থ হাঁস এর কাছ থেকে আলাদা রাখতে হবে।
ডাকভাইরাল হেপাটাইটিসঃ সাধারণত হাঁসের বাচ্চারা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। জন্মের পর থেকে ৫ সপ্তাহ পর্যন্ত এই রোগ এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি।এ মারাত্মক রোগটি পিকরনাস ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়।
লক্ষন সমুহঃ
- ঘাড় বাঁকা করে একদিকে হাটে এবং ঘুরতে থাকে।
- খাদ্য গ্রহণ তুলনামূলক ভাবে কমিয়ে দেয়সবুজ পায়খানা করে।
- লিভার এবং কিডনির স্প্রিন বড় হয়।
চিকিৎসাঃ
- এর আগে আক্রান্ত হলে দ্রুত টিকা প্রদান করতে হবে।
- অনেক সময় টিকা দিয়েও বাঁচানো যায় না।
- মৃত হাঁসকে পুঁতে ফেলতে হবে এবং খামারে ব্লিচিং পাউডার ও জীবণুনাশক দিয়ে খুব ভালোমতো পরিষ্কার করতে হবে।
- এটি রোগটি মূলত বাতাসের সাহায্যে ছড়ায়।
ডাকপ্লেগঃ হাঁসের অন্যতম একটি রোগের নাম হচ্ছে ডাক প্লেগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে ৯০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত হাঁস মারা যেতে পারে। এ রোগের আরেকটি নাম হচ্ছে ডাক ভাইরাস এন্টারাইটিস। আমাদের দেশে সবথেকে এই রোগটি বেশি দেখা যায়। এ রোগে আক্রান্ত হাঁসের জন্য সরকারিভাবে ঠিকার ব্যবস্থা রয়েছে।
লক্ষণ সমূহঃ
- হঠাৎ আক্রান্ত হয় এবং একসাথে অনেকগুলো মারা যেতে থাকে।
- খাদ্য কম খায় কিন্তু পানি বেশি খায়।
- চোখের পাতা ফুলে যায় পানি পড়ে ও ময়লা জমে যায়।
- মাথা ঘাড় ঘোরাতে থাকে এবং একসময় পড়ে মারা যায়।
- ঘাড় পাশে অথবা পিছনের দিকে বাকাঁ হয়ে যায় এবং মারা যায়।
চিকিৎসাঃ
- টিকা প্রদান করতে হবে।
- ২১ থেকে ২৮ দিনে প্রথম টিকা,৩৬ থেকে ৪৩ দিনে বুকের মাঝখানে দ্বিতীয় টিকা,পরবর্তীতে ৪-৫ মাস পর পর টিকা দেওয়া।
- ১০০ মিলি পরিস্কার পানির সাথে সরকারি টিকা ১০০ ডোজ পানির সাথে মিশিয়ে বুকের মাঝখানে মাংসে এক মিলিমিটার করে ইনজেকশন দিতে হবে।
- সঠিকভাবে সিডিউল মেনে টিকা দিতে হবে।
- ভালো খাবার দিতে হয়।
ডাক কলেরাঃ ডাক কলেরা হলো একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। হাঁস মুরগি উভয়ই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। দুই মাস বয়সী হাঁস মুরগি বেশি এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে এবং আক্রান্ত হয়। এ রোগ মূলত পানি এবং খাবার থেকে সংক্রমণ ঘটায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে মৃত্যু আর প্রায় ৫০ ভাগ এর মতো হয়ে থাকে।
লক্ষণ সমূহঃ
- এ রোগে আক্রান্ত হলে হাঁস পাতলা সবুজ পায়খানা করে।
- আক্রান্ত হাঁসের হাঁটু এবং মাথা ফুলে ওঠে।
- পা প্যারালাইসিস এ আক্রান্ত হয়।
- শ্বাসকষ্টের কারণে মুখ হা করে নিশ্বাস নেয় এবং পিপাসা বেড়ে যায়।
- নাক মুখ দিয়ে লালা পরে এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
- দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে ডিম পাড়া বন্ধ হয়ে যায়।
চিকিৎসাঃ
- জেন্টামাইসিন, পোটেনশিয়াল সালফোনেমাইড এ রোগে ভালো কাজ করে।
- ৪৫ থেকে ৬০ দিনে ১ম ডোজ, ৬০ থেকে ৭৫ দিন পর দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ বুকের চামড়ার নিচে দিতে হবে। পরবর্তীতে ৪ থেকে ৫ মাস পর পর দিতে হবে।
মাইকোটক্সিকোসিস ও বটুলিজমঃ সাধারণত পচা নষ্ট বাঁশি ফেলে দেয়া উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। হাঁস বেশিরভাগ সময় যে পানিতে ঘুরে বেড়ায় তার অধিকাংশই নোংরা পানি। আর নোংরা পানিতেই এ দুটি রোগ বেশি হয়ে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। যা মহামারি আকার পর্যন্ত ধারণ করতে পারে।
লক্ষণ সমূহঃ
- হাঁস নিস্তেজ ও দুর্বল হয়ে পড়ে।
- হঠাৎ করেই অনেকগুলো হাঁস মারা যায়।
- পাখা, পা ও ঘাড় প্যারালাইসিস আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে।
- পিছন দিক থেকে বটুলিজম বের হয়।
- গন্ধযুক্ত পায়খানা করে।
চিকিৎসাঃ
- এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রচুর পরিমাণে তরল পানি পান করাতে হবে।
- এতে শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন বের হয়ে যাবে।
- হাঁসকে দ্রুত এন্টিবায়োটিক দিতে হবে।
আমাশয়ঃ হাঁসের বাচ্চারা সাধারণত আমাশয় রোগে আক্রান্ত হয়। এতে হাঁসের ওজন কমে যায়। টাইজেরিয়া পারনিসিয়া নামের প্রোটোজোয়া কারণে এ রোগ হয়।
লক্ষণ সমূহঃ
- হাঁসের বাচ্চার ওজন কমে যায়।
- খাদ্য কম খাওয়ার কারণে দুর্বল হয়ে পড়ে।
- প্রথমে সাদাটে পরে রক্ত মিশ্রিত পায়খানা করে।
- ধীরে ধীরে দুর্বল হতে হতে একপর্যায়ে মারা যায়।
চিকিৎসাঃ
- এ রোগে আক্রান্ত হলে ইএসবি৩ কোসুমিক্স প্লাস দেওয়া যেতে পারে।
- খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- সঠিকভাবে বাচ্চার যত্ন নিতে হবে।
কোন জাতের হাঁস পালনে লাভ বেশি
অতি অল্প সময়ে হাঁস পালন একটি লাভজনক প্রক্রিয়া। বাংলাদেশে বেশ কয়েক প্রকার হাঁসের জাত রয়েছে যেমন: খাকি ক্যাম্পবেল, ইন্ডিয়ান রানার, বেইজিং বা পিকিং, জিংন্ডিং, চীনা হাঁস, দেশি হাঁস অন্যতম। এসব হাঁস বছরে ২০০- ৩০০ টির মত ডিম পাড়ে। খাকি ক্যাম্পবেল ও জিন্ডিং হাঁস সর্বাধিক ডিম দিয়ে থাকে। খাকি ক্যাম্পবেল বছরে ৩০০টির অধিক ডিম দিয়ে থাকে।
এবং প্রতিটি গড় ওজন ৬০-৭০ গ্রাম করে হয়। শুরুতে ১০০ টি হাঁস নিয়ে খামার শুরু করতে পারেন। ১০০ টি হাঁসের মধ্যে ৮০-৯০টি ডিম পাড়া হাঁস রাখতে হবে। তাহলে প্রতিদিন ৭০-৮০ টির মতো ডিম পাবেন। যদি ১দিনে ৭০ - ৮০ টির মত ডিম পান তাহলে মাসে ২১০০-২৪০০ মতো ডিম পাবেন। আর প্রতিটি ডিমের দাম যদি গড়ে ১০ টাকা করে হয় তাহলে মাসে ২,১০০০-২,৪০০০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। আর বছরে ২,৫০০০০-৩,০০০০০ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
আর খামারে যদি হাঁসের সংখ্যা আরো বেশি থাকে তাহলে বছরে কত লাখ টাকা আয় করতে পারবেন একবার ভেবে দেখুন!!!! এই হাঁস পালন করার জন্য আপনাকে অতিরিক্ত কোন খরচ করতে হবে না। আবদ্ধ, অর্ধ-আবদ্ধ, মুক্ত এই তিন পদ্ধতিতে হাঁস পালন করতে পারবেন। এবং অল্প জায়গায় অনেকগুলো হাঁস একসঙ্গে পালন করতে পারবেন।
এসব ডিম পাড়া হাঁসের ওজন ১.৫কেজি থেকে শুরু হয় এবং ৩.৫ কেজি কেজি পর্যন্ত হয়। এসব হাঁস আবার ২০০-৩০০ টাকা করে বিক্রি ও হয়। অর্থাৎ আপনি একসঙ্গে ডিম এবং হাঁস দুটি পাবেন।
হাঁসের ঘর তৈরি এবং পরিচর্যা
হাঁস মুক্ত, অর্ধ আবদ্ধ এবং আবদ্ধ এই তিন ভাবে পালন করা যায়, হাঁসের বাসস্থান তৈরীর জন্য কাঠ এবং বাঁশ দিয়ে শক্ত করে ঘর তৈরি করতে হবে। হাঁস আকারে ছোট হওয়ায় এক জায়গায় অনেকগুলো রাখা যায়। প্রতিটি হাঁসের জন্য ২ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন হয়। ৬ মাস পর্যন্ত পালন করতে হলে প্রতিটি হাঁসের জন্য ১৫ কেজি খাবার দরকার হয়।
৬ মাস পর দৈনিক ১৬০ গ্রাম হিসেবে খাবার লাগে।মুক্ত অবস্থায় পালন করলে খাদ্যের জন্য অল্প টাকা লাগে। হাঁসের বাসস্থান প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। হাঁসের বর্জ্য থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়ায়। নিয়মিত বর্জ্য পরিষ্কার না করলে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বা সংক্রমকরোগে আক্রান্ত হতে পারে। আলো বাতাস চলাচল করতে পারে এরূপ ঘর নির্মাণ করতে হবে।হাঁসকে আক্রান্ত পশু পাখির হাত থাকে সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
আমাদের এই পোস্টটি পরে যদি আপনার কাছে ভাল লাগে বা একটু হলেও আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে বেশি বেশি শেয়ার করবেন। আপনার শেয়ার করা এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে এবং উপকৃত হবে। তাই আর দেরি না করে সবার সাথে পোস্টটি শেয়ার করুন।
পোস্টটি পরে আপনাদের যদি কোন মতামত থাকে বা কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url